সকাল দশটার সাবালক রোদ্দুরও টোলগে ওজবে-র কথা বলার উৎসাহ কেড়ে নিতে পারেনি।
ঘামছেন, কিন্তু মুখে খই। যুবভারতীর কৃত্রিম ঘাসে দাঁড়িয়ে, মঙ্গলবার সকালে আরও কথা বলতে রাজি, “গোয়ায় সালগাওকর ম্যাচটাই আমাদের শেষ করে দিল। কিন্তু কলকাতায় যা উৎসাহ দেখেছি, বুকে থেকে যাবে। আশি, নব্বই হাজার লোকে কলকাতায় ফুটবল দেখে, অস্ট্রেলিয়ায় আগে কেউ বিশ্বাস করত না। এ বার আমাকে দেখে আরও অস্ট্রেলিয়ান এখানে আসতে চাইবে।” বাড়ি ফেরার আনন্দ মুখে লেগে।
ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের গলাও তরতাজা। অবিরাম ঘাম মুখেচোখে। কিন্তু বিরামহীন কথা।
এত ম্যাচ থাকতে সাদার্ন সমিতির কাছে শেষ মিনিটে নাটকীয় জেতার কথা তুললেন। মনে হল না, আই লিগ ব্যর্থতার বিস্তৃত ব্যাখ্যায় তেমন কোনও ইচ্ছে আছে। ভাল স্মৃতিই বুকে রাখছেন। এ বছর চিরাগ ইউনাইটেডকে একবারও হারাতে পারেননি বলা হলে পাত্তা দিলে তো!
মন রীতিমতো খুশ দু’জনের। বুধবার খেলেই সিঙ্গাপুরের বিমান ধরছেন দুই অস্ট্রেলিয়ান। সেখান থেকে দু’জনার দুটি পথ। টোলগে সিডনির বিমানে। মর্গ্যান পারথের।
কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের বাকিদের মন? এ মরসুমের শেষ প্র্যাক্টিস করে বেরিয়ে আসার সময় মেহরাজ, মেহতাব, নবি, সৌমিক, অভ্র, সন্দীপদের অধিকাংশেরই মন ভাল নেই। এক-এক জনের এক-এক অভিব্যক্তি। মাঠের ধারে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলেন কেউ। কারও বুকে হাত। কারও কপালে। পরের বছর অনেককেই সঙ্গী পাওয়া যাবে না!
এবং সেটাই বোধহয় দুঃখের প্রধান কারণ নয়। প্রধান কারণ অন্য। মন ভাল নেই ‘মানি’ নেই বলে!
পরিবর্তন-উত্তর যুবভারতীতে এখন ঢুকলে দেখা যায়, প্রধান গেটের সামনে সুভাষ চক্রবর্তীর ছবি লাগানো অংসখ্য পোস্টার, অপটু হাতের দেওয়াল লিখন উধাও। সুভাষের মৃত্যুর পরে তৈরি শহিদ বেদি থেকে লাল পতাকাও রাতারাতি অদৃশ্য।
ক’দিন আগের চনমনে ইস্টবেঙ্গলও নতুন চেহারায়। বিমর্ষ।
টোলগে-মর্গ্যানের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত। কিন্তু ভারতীয়দের অনেকের সঙ্গেই ক্লাবের কথা হয়নি। যাঁদের সঙ্গে হয়েছে, তাঁদের টাকার অঙ্ক কম।
অভ্র, মেহরাজ: বুঝে গিয়েছেন, ক্লাব রাখবে না। চোখ গোয়ায়।
সন্দীপ: ভাল খেলেও গুরুত্ব পাচ্ছেন না। মর্গ্যান ও অতনু তাঁকে চাইলেও ক্লাব কর্তারা কথা বলেননি।
সৌমিক: রবার্ট, পাইতে, চরণ রাইরা চার্চিল থেকে আসছেন বলে অধিনায়কের বাজার দর কম। সকালেও বলছিলেন, কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি।
নবি: বেশি টাকা না পাওয়ায় সৌমিকের মতোই মোহনবাগানে পা বাড়িয়ে।
মেহতাব: দু’বছরের চুক্তিতে ফেঁসে। লিগের সেরা ভারতীয় ফুটবলার এত ভাল খেলেও টাকা বেশি পাচ্ছেন না। তাঁকে যা টাকা দেওয়া হচ্ছে, তার থেকে বেশি পাচ্ছেন ক্লাবেরই সতীর্থ। চার্চিল, মোহনবাগানের বিশাল প্রস্তাব তাঁকে ভাবাচ্ছে।
কাকে এ সব দুঃখ জানাবেন? প্র্যাক্টিসে মাত্র এক কর্তা হাজির।
ওপারা? পেন? ইস্টবেঙ্গলে এই দু’জন তো গড়িয়াহাটের মোড়ের স্মৃতির ট্রামলাইনের মতো। রোমান্টিকতা মাখা ট্রামলাইনটা পড়ে রয়েছে। কিন্তু কবে চালু হবে, আদৌ হবে কি না কারও মাথাব্যথা নেই। এঁরা দু’জন চুক্তির জন্য ইস্টবেঙ্গলে পড়ে আছেন। কিন্তু মন যে কোথায় কেউ জানে না! চোট বলে শেষ প্র্যাক্টিসেই আসেননি! মর্গ্যানের দলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, শুরুর দিকে দুই নাইজিরিয়ানের পারফরম্যান্স যা ছিল, শেষ দিকে তা ছিল না। ‘মন’ ভাল নেই! পেন তো ডেম্পোর সঙ্গে কথা বলে রেখেছেন।
সুব্রত ভট্টাচার্যর চিরাগ ইউনাইটেডেও ‘মন’ ভাল নেই অনেকের। সুনীল ছেত্রী, লালকমলরা পা বাড়িয়ে দল ছাড়তে। জোসিমার ছাড়া বাকি দুই বিদেশি জুনিয়র, চিকা-র বিদায়ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। স্বয়ং সুব্রতকেও এখন বলা হয়নি, তিনি কোন সিনেমার চিত্রনাট্যে। বাই-বাই, না, ওয়েলকাম। পরের বারের বাজেট নিয়ে আলোচনাই হয়নি। তবু সুব্রত নিজেই নিজের মতো করে তাতানোর এক রসদ খুঁজে নিয়েছেন। “এ বছর মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল হারাতে পারেনি আমাদের। এই রেকর্ডটা রাখতে হবে!”
মর্গ্যানও নিজের মতো একটা মোটিভেশন তৈরি করতে পারতেন! চিরাগকে প্রথম বার হারানোর স্বস্তি। আই লিগে রানার্স হয়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর তৃপ্তি।
খুব একটা নিশ্চিত নই, মর্গ্যানের ভাঙা দলের অন্দরে এমন কোনও সুরেলা অর্গ্যান বাজছে!
ঘামছেন, কিন্তু মুখে খই। যুবভারতীর কৃত্রিম ঘাসে দাঁড়িয়ে, মঙ্গলবার সকালে আরও কথা বলতে রাজি, “গোয়ায় সালগাওকর ম্যাচটাই আমাদের শেষ করে দিল। কিন্তু কলকাতায় যা উৎসাহ দেখেছি, বুকে থেকে যাবে। আশি, নব্বই হাজার লোকে কলকাতায় ফুটবল দেখে, অস্ট্রেলিয়ায় আগে কেউ বিশ্বাস করত না। এ বার আমাকে দেখে আরও অস্ট্রেলিয়ান এখানে আসতে চাইবে।” বাড়ি ফেরার আনন্দ মুখে লেগে।
ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের গলাও তরতাজা। অবিরাম ঘাম মুখেচোখে। কিন্তু বিরামহীন কথা।
এত ম্যাচ থাকতে সাদার্ন সমিতির কাছে শেষ মিনিটে নাটকীয় জেতার কথা তুললেন। মনে হল না, আই লিগ ব্যর্থতার বিস্তৃত ব্যাখ্যায় তেমন কোনও ইচ্ছে আছে। ভাল স্মৃতিই বুকে রাখছেন। এ বছর চিরাগ ইউনাইটেডকে একবারও হারাতে পারেননি বলা হলে পাত্তা দিলে তো!
মন রীতিমতো খুশ দু’জনের। বুধবার খেলেই সিঙ্গাপুরের বিমান ধরছেন দুই অস্ট্রেলিয়ান। সেখান থেকে দু’জনার দুটি পথ। টোলগে সিডনির বিমানে। মর্গ্যান পারথের।
কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের বাকিদের মন? এ মরসুমের শেষ প্র্যাক্টিস করে বেরিয়ে আসার সময় মেহরাজ, মেহতাব, নবি, সৌমিক, অভ্র, সন্দীপদের অধিকাংশেরই মন ভাল নেই। এক-এক জনের এক-এক অভিব্যক্তি। মাঠের ধারে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলেন কেউ। কারও বুকে হাত। কারও কপালে। পরের বছর অনেককেই সঙ্গী পাওয়া যাবে না!
এবং সেটাই বোধহয় দুঃখের প্রধান কারণ নয়। প্রধান কারণ অন্য। মন ভাল নেই ‘মানি’ নেই বলে!
পরিবর্তন-উত্তর যুবভারতীতে এখন ঢুকলে দেখা যায়, প্রধান গেটের সামনে সুভাষ চক্রবর্তীর ছবি লাগানো অংসখ্য পোস্টার, অপটু হাতের দেওয়াল লিখন উধাও। সুভাষের মৃত্যুর পরে তৈরি শহিদ বেদি থেকে লাল পতাকাও রাতারাতি অদৃশ্য।
ক’দিন আগের চনমনে ইস্টবেঙ্গলও নতুন চেহারায়। বিমর্ষ।
টোলগে-মর্গ্যানের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত। কিন্তু ভারতীয়দের অনেকের সঙ্গেই ক্লাবের কথা হয়নি। যাঁদের সঙ্গে হয়েছে, তাঁদের টাকার অঙ্ক কম।
অভ্র, মেহরাজ: বুঝে গিয়েছেন, ক্লাব রাখবে না। চোখ গোয়ায়।
সন্দীপ: ভাল খেলেও গুরুত্ব পাচ্ছেন না। মর্গ্যান ও অতনু তাঁকে চাইলেও ক্লাব কর্তারা কথা বলেননি।
সৌমিক: রবার্ট, পাইতে, চরণ রাইরা চার্চিল থেকে আসছেন বলে অধিনায়কের বাজার দর কম। সকালেও বলছিলেন, কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি।
নবি: বেশি টাকা না পাওয়ায় সৌমিকের মতোই মোহনবাগানে পা বাড়িয়ে।
মেহতাব: দু’বছরের চুক্তিতে ফেঁসে। লিগের সেরা ভারতীয় ফুটবলার এত ভাল খেলেও টাকা বেশি পাচ্ছেন না। তাঁকে যা টাকা দেওয়া হচ্ছে, তার থেকে বেশি পাচ্ছেন ক্লাবেরই সতীর্থ। চার্চিল, মোহনবাগানের বিশাল প্রস্তাব তাঁকে ভাবাচ্ছে।
কাকে এ সব দুঃখ জানাবেন? প্র্যাক্টিসে মাত্র এক কর্তা হাজির।
ওপারা? পেন? ইস্টবেঙ্গলে এই দু’জন তো গড়িয়াহাটের মোড়ের স্মৃতির ট্রামলাইনের মতো। রোমান্টিকতা মাখা ট্রামলাইনটা পড়ে রয়েছে। কিন্তু কবে চালু হবে, আদৌ হবে কি না কারও মাথাব্যথা নেই। এঁরা দু’জন চুক্তির জন্য ইস্টবেঙ্গলে পড়ে আছেন। কিন্তু মন যে কোথায় কেউ জানে না! চোট বলে শেষ প্র্যাক্টিসেই আসেননি! মর্গ্যানের দলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, শুরুর দিকে দুই নাইজিরিয়ানের পারফরম্যান্স যা ছিল, শেষ দিকে তা ছিল না। ‘মন’ ভাল নেই! পেন তো ডেম্পোর সঙ্গে কথা বলে রেখেছেন।
সুব্রত ভট্টাচার্যর চিরাগ ইউনাইটেডেও ‘মন’ ভাল নেই অনেকের। সুনীল ছেত্রী, লালকমলরা পা বাড়িয়ে দল ছাড়তে। জোসিমার ছাড়া বাকি দুই বিদেশি জুনিয়র, চিকা-র বিদায়ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। স্বয়ং সুব্রতকেও এখন বলা হয়নি, তিনি কোন সিনেমার চিত্রনাট্যে। বাই-বাই, না, ওয়েলকাম। পরের বারের বাজেট নিয়ে আলোচনাই হয়নি। তবু সুব্রত নিজেই নিজের মতো করে তাতানোর এক রসদ খুঁজে নিয়েছেন। “এ বছর মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল হারাতে পারেনি আমাদের। এই রেকর্ডটা রাখতে হবে!”
মর্গ্যানও নিজের মতো একটা মোটিভেশন তৈরি করতে পারতেন! চিরাগকে প্রথম বার হারানোর স্বস্তি। আই লিগে রানার্স হয়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর তৃপ্তি।
খুব একটা নিশ্চিত নই, মর্গ্যানের ভাঙা দলের অন্দরে এমন কোনও সুরেলা অর্গ্যান বাজছে!
No comments:
Post a Comment